ঢাকা, বুধবার   ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পাপনের কমিশন বাণিজ্যে ধ্বংস ক্রিকেটের মেরুদণ্ড

আকাশ উজ্জামান

প্রকাশিত : ১২:২১, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | আপডেট: ১২:২৪, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নাজমুল হাসান পাপন, গত এক যুগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডর মুকুটহীন সম্রাট। ক্ষমতার দাপটে  ক্রিকেট বোর্ডে যা ইচ্ছে তাই করেছেন। বেশিরভাগ পদেই বসিয়েছেন নিজের পছন্দের লোক। পাপনের পাপে রীতিমতো ধ্বংস হয়েছে ক্রিকেটের মেরুদণ্ড। ক্ষমতার পালাবদলে বেরিয়ে আসছে পাপন ও তাঁর অনুসারীদের সব অনিয়ম। 

সাবেক ক্রিকেটার ও সংগঠকরা মনে করেন, পাপন আমলে বিসিবির অ-ব্যবস্থাপনার প্রভাব পড়েছে জাতীয় দলের পারফরম্যান্সেও। 

২০১২ সাল, বিসিবির সভাপতির চেয়ারে বসেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের ছেলে নাজমুল হাসান পাপন। এক বসাতেই ১২ বছর পার।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের আয়ের বেশিরভাগ এসেছে আইসিসি ও এসিসির লভ্যাংশ থেকে। বাকিটা সিরিজ আয়োজন ও টিভি স্বত্ব। তাহলে পাপন ও তার অনুসারীরা করেছেনটা কি? 

এত টাকা কোথায় খরচ করেছে পাপনের বোর্ড। সবশেষ বাজেটে দেখা যায়, কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ হয়েছে লজিস্টিক, অপারেশন ও বিপিএল পরিচালিনায়। 

বিসিবি সাবেক পরিচালক খন্দকার জামিল উদ্দিন বলেন, “একসময় বলা হতো আইপিএলের পর এই বিপিএল। সেই জিনিসটা শুরুর পর থেকে আস্তে আস্তে পতনের দিকে যেতে লাগলো।”

বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট বলেন, “গেল ১২-১৪ বছরে ক্রিকেটের খুব একটা উন্নতি ঘটেনি। “

উন্নয়ন তো হয়ইনি উল্টো ধংস হয়েছে ঘরোয়া ক্রিকেট। ১২ বছরেও সম্ভব হয়নি ক্রিকেটের বিকেন্দ্রীকরণ।  

খন্দকার জামিল উদ্দিন বলেন, “তরুণ-প্রবীনের সমন্বয়ে আন্তর্জাতিক মানের টিম তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে ক্রিকেট বোর্ড। এর জন্য দায়ী হচ্ছে অ-ব্যবস্থাপনা।”

খালেদ মাসুদ পাইলট বলেন, “বেশির ভাগ জেলায় খেলা হয় না, ক্রিকেট লীগ হয় না এবং জেলা পর্যায়ে নতুন নতুন মাঠ তৈরি করা- সেই জায়গাগুলো প্রসারিত হয়নি।”

তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেট লিগের এন্ট্রি ফি একলাফে হয়েছে ৫ লাখ। দ্বিতীয় বিভাগ ও প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগের খেলাও ছিলো পক্ষপাতিত্ব।

লিজেন্স অফ রুপগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক তারিকুল ইসলাম বলেন, “আম্পায়ার কোনো না কোনো ভাবে একটি দলকে সাপোর্ট করতো। আমাদের এখানে ন্যাশনাল টিমের ৪-৫ জন খেলোয়াড় খেলতেন। এই খেলোয়াড়দেরকে ভয় দেখানো হয়েছে, যেন রূপগঞ্জে কেউ না খেলে।”

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খুশি করতে পাপনরা এমন জায়গায় অর্থ ঢেলেছেন, যেটির সঙ্গে ক্রিকেটের কোনো সংযোগ নেই। 

তার মধ্যে- ক্রিকেট সেলিব্রেটস মুজিব ১০০ নামে বিসিবি খরচ করেছে ২০ কোটি টাকা। ২০১৯ সালে ‘বঙ্গবন্ধু বিপিএল’ নামে ৮০ কোটি টাকা খরচ করেছে বিসিবি। শেখ হাসিনা স্টেডিয়ামের কাজ শুরুর আগেই যার খরচ ছাড়িয়েছে শত কোটি টাকা। বিদেশি কোচ নিয়োগের নামে কমিশন বাণিজ্য ক্রিকেট পাড়ায় এখন ওপেন সিক্রেট। একই প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে দিয়ে অডিট।

অথচ শুধু রাজনৈতিক বিবেচনায় বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামটা ‘পরিত্যক্ত’ থেকেছে বছরের পর বছর। টেস্ট ভেন্যু খুলনা ও ফতুল্লা স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়না বহু বছর। সাম্রাজ্য চালাতে কাউন্সিলরশিপেও দুর্নীতি করেছেন পাপন। বার্ষিক সাধারণ সভাগুলো ছিলো সদস্যদের দামি উপহার পাওয়ার অনুষ্ঠান।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি